জেলার পটভূমি
নামকরণঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মোঘল-পূর্ব যুগে কিছু গুরুত্বধারন করলেও শহরটি ইতিহাসে
প্রসিদ্ধি লাভ করে মোঘল যুগে। ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্ট করে
তেমন কিছু জানা যায় না। এ সম্পর্কে প্রচলিত মতগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপঃ
ক) একসময় এ অঞ্চলে প্রচুর ঢাক গাছ (বুটি ফুডোসা) ছিল; খ) রাজধানী উদ্বোধনের দিনে ইসলাম খানের নির্দেশে এখানে ঢাক অর্থাৎ ড্রাম বাজানো হয়েছিল; গ) ‘ঢাকাভাষা’ নামে একটি প্রাকৃত ভাষা এখানে প্রচলিত ছিল; ঘ) রাজতরঙ্গিণী-তে ঢাক্কা শব্দটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখিত
হয়েছে অথবা এলাহাবাদ শিলালিপিতে উল্লেখিত সমুদ্রগুপ্তের পূর্বাঞ্চলীয়
রাজ্য ডবাকই হলো ঢাকা। মোঘল পূর্ব যুগের পুরাতাত্বিক নিদর্শন হিসেবে ঢাকা
শহরে দু’টি এবং মিরপুরে একটি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে প্রাচীনতমটির নির্মাণ তারিখ ১৪৫৬ খ্রিষ্টাব্দ (জোয়াও দ্য ব্যারোস ঢাকাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে দেখতে পান এবং ১৫৫০ খ্রিষ্টাব্দে তার অঙ্কিত মানচিত্রে এর অবস্থান নির্দেশ করেন।
আকবর
নামা গ্রন্থে ঢাকা একটি থানা (সামরিক ফাঁড়ি) হিসেবে এবং আইন-ই- আকবরী
গ্রন্থে সরকার বাজুহার একটি পরগনা হিসেবে ঢাকা বাজু উল্লিখিত হয়েছে। ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম খান চিশতি সুবাহ বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং সম্রাটের নামানুসারে এর নামকরণ করে জাহাঙ্গীরনগর।
প্রশাসনিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর নামকরণ হলেও সাধারণ মানুষের মুখে ঢাকা নামটিই থেকে যায়। সকল বিদেশী পর্যটক এবং বিদেশী কোম্পানির কর্মকর্তারাও তাদের বিবরণ এবং চিঠিপত্রে ঢাকা নামটি ব্যবহার করেন।
ghh
ঐতিহাসিক ঘটনাবলী ও প্রশাসনিক বিবর্তনঃ মুসলিম পূর্ব যুগে বর্তমান ঢাকা জেলা অঞ্চল ‘বঙ্গ’ নামে পরিচিত প্রশাসনিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এর কিয়দংশ কখনো কখনো সমতট এবং কখনো কখনো হরিকল নামে পরিচিত
ছিল। এয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী বঙ্গ
দেশে সেন রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে মুসলিম রাজত্বের সূচনা করেন।
মোঘল যুগের পূর্বে বাংলার হিন্দু ও মুসলিম শাসকেরা ঢাকার চারিদিকের বিভিন্ন অবস্থানে তাদের রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এসব
রাজধানী নগরীর কয়েকটি নিদর্শন এখনো বিক্রমপুর, ভাওয়াল ও সোনারগাঁওয়ে দেখা
যায়। ১৫৭৫ সালে মোঘলরা পাঠান সুলতানের কাছ থেকে বাংলার শাসনভার ছিনিয়ে
নিলেও তাদেরকে বাংলার ভূস্বামী বা ভূইয়াদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখবার জন্য
যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়।
১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রায় একশত বছর ঢাকার মর্যাদা
অক্ষুণ্ণ ছিল। এ শহরে ছিল প্রশাসনিক সদর দফতর এবং সুবাহদার ও অন্যান্য
কর্মচারীদের বাসস্থান। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কারণে মাহজাদা সুজা (১৬৩৯-৫৯)
রাজধানী স্থানান্তর করেন। সুবাহদারি স্থানান্তরিত হলে ঢাকা রাজধানীর গুরুত্ব হারিয়ে একটি স্থানীয় প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।
পরবর্তী সুবাহদার শাহ সুজা ঢাকায় নির্মাণ কর্মকান্ড শুরু
করেন। শাহ সুজার দীউয়ান মীর আবুল কাশিম ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে বড় নামে একটি
সুপ্রশস্ত ইমারত নির্মাণ করেছিলেন। ইমারতটির অবস্থান বুড়িগঙ্গার তীরে এবং
বর্তমান চকবাজারের দক্ষিণে।
ঢাকার ইতিহাসে বেশ কয়েকটি নির্মাণ কাজের সঙ্গে মীরজুমলা নাম জড়িয়ে আছে, প্রথমে মীরজুমলার গেট পরবর্তী সময়ে যা রমনা গেট নামে পরিচিত হয়। কার্জন হল এর কাছাকাছি ও পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের পশ্চিমে ময়মনসিংহ রোডে গেটটি অবস্থিত।
পরবর্তী সুবাদার শায়েস্তা খান ছিলেন একজন খ্যাতিমান নির্মাতা। অবশ্য তিনি একটি কাটরাও নির্মাণ করেন। এটি ছোট কাটরা নামে পরিচিত, শাহ সুজার
বড় কাটরা থেকে পৃথক করার জন্য এ নামকরণ। তিনি বেশ কয়েকটি মসজিদ ও
সমাধিসৌধও নির্মাণ করেন। মসজিদ গুলির মধ্যে চকবাজার মসজিদ, বাবুবাজার মসজিদ
ও সাতগম্বুজ মসজিদ বিখ্যাত। সমাধিগুলির মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে
বিবি পরীর সমাধি।
নদীপথের পাশে অবস্থানের কারণে ঢাকা প্রাক-মোঘল যুগেই স্থানীয় বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। কেননা ঢাকা ছিল একটি উৎপাদন কেন্দ্র।
এখানে
উৎপাদিত সুতিবস্ত্র উচ্চমান সম্পন্ন এবং বহির্বিশ্বে ছিল এর প্রচুর
চাহিদা। মসলিন নামে পরিচিত বিভিন্ন ধরনের সুতিবস্ত্র বাইরে রপ্তানি হতো। এ
সব ক্রয়ের জন্য ইউরোপীয় কোম্পানীগুলো আমদানি করত প্রচুর স্বর্ণ ও রৌপ্য পিন্ড।
বাংলার নওয়াবদের রাজনৈতিক ক্ষমতার পতন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান
আঠারো শতকের শেষভাগে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্বকে ম্লান করে দেয়। উপরন্তু,
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক ও উৎপাদন নীতি নগরীর আর্থিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়।
উন্নয়নের
নতুন ধারা এবং সমৃদ্ধির নতুন যুগের সূত্রপাতের মাধ্যমে ১৮৪০- এর দশক নগর
ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করে। নগর উন্নয়নের এ যাত্রা তখন থেকেই
অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। প্রশাসনিক ক্রমবৃদ্ধি ইতঃপূর্বে ঢাকা জেলা
প্রশাসনের কেন্দ্র ছিল।
এটি ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ নামে একটি বৃহৎ বিভাগের সদর দফতরে পরিণত হয়।
এরপর ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ১৮৮৫ সালের মধ্যে
বঙ্গপ্রদেশে কলকাতার পরে ঢাকা নগরীকে সর্ববৃহৎ বেসামরিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
১৯০৫-১১ সালের দিকে ঢাকার প্রশাসনিক
গুরুত্ব নাটকীয়ভাবে আরও বৃদ্ধি পায় যখন এটিকে পূর্ব বাংলা ও আসাম নামে
নতুন প্রদেশের রাজধানী করা হয়। একটি হাইকোর্ট এবং একটি সচিবালয়সহ একজন
লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করা হয়।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান এবং স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার
পর পূর্ব বাংলা নামে নতুন প্রদেশের রাজধানী হওয়ায় ঢাকার উথানে অধিকতর
স্থায়ী উন্নয়ন সাধিত হয়। এ সময় হতে ঢাকা শুধু এ নতুন প্রদেশের প্রশাসনিক
সদর দফতরই ছিল না বরং এখানে আইন পরিষদ এবং জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসত।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ
করে এবং পরিচিতি লাভ করে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে
ঢাকা রাজনৈতিক , প্রশাসনিক কার্যকলাপ এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও
সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্ররূপে মর্যাদা লাভ
করে। এক নজরে জেলা
আয়তন : ১৬৮৩.২৭ বর্গ কিঃ মিঃ
সংসদীয় আসন সংখ্যা : 20 টি
মোট লোক সংখ্যা : ৮৬ লক্ষ ১৮ হাজার ৭ শত জন।
পুরুষ= ৪৭,৯৫,৩০০
মহিলা= ৩৮,২৩,৪০০
(২০০১ সালের হিসাব অনুযায়ী)
শিক্ষার হার : ৬৪.২৬%
ক) উপজেলার সংখ্যা : ৫ টি
খ) উন্নয়ন সার্কেল : ১ টি
সিটিকর্পোরেশন : ১ টি
পৌর সভার সংখ্যা : ৩ টি
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা : ৭৯ টি
গ্রাম সংখ্যা : ১ হাজার ৮ শত ৬৩ টি
কলেজের সংখ্যা : ১৬৭ টি
হাইস্কুলের সংখ্যা : ৪৭৯ টি
মাদ্রাসার সংখ্যা : ১৬৫ টি
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৭২৮ টি
বেসরকারী প্রাথমিকবিদ্যালয়ের সংখ্যা : ৬৮৯
মসজিদের সংখ্যা : ৩০৮৮ টি
মন্দিরের সংখ্যা : ৮০৮ টি
গীর্জার সংখ্যা : ৩৩ টি
মোট আবাদী জমির পরিমান: ১০৯১২৯ হেক্টর
অর্থকরী ফসল : পাট, তুলা, আখ
শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা : ১০ জনের অধিক জনবল
৯৪২৫ টি ১০ জনের কম
জনবল- ৩২৪৪০ টি।
রাস্তার মোট সংখ্যা : ১৫৯৮ টি
রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য : ৪১০৭ কিঃ মিঃ
কাঁচা রাস্তা : ৩১৪৬ কিঃ মিঃ
আধা পাকা : ৫৪৬ কিঃ মিঃ
ইট পাকা : ৩৯৯ কিঃ মিঃ
শক্ত আর সিসি রাস্তা : ১৬ কিঃ মিঃ
খাদ্য গুদামের সংখ্যা : ০৭ টি
ধারণ ক্ষমতা ; ৪৬,২৫০ মেঃ টন
জলাভূমির সংখ্যা : ১২ টি (২০ একরের উর্দ্ধে)
মোট মৌজার সংখ্যা : ১,০৯৬ টি
ভাষা ও সংস্কৃতি
ঐতিহাসিক
ঢাকার অনেক আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য থাকলেও আজ আধুনিক ঢাকার ছোঁয়ায় তা অনেকটাই
বিলীন। তবুও আজকের পুরান ঢাকা নামে পরিচিত অতীতের ঢাকা শহরে এসব আঞ্চলিক
বৈশিষ্ট্যসমূহ কিছু কিছু চোখে পড়ে।
খাদ্য
ও রান্নাবান্না সম্পর্কিত খ্যাতি বিদেশী খাদ্য এবং রান্নাবান্নায়
পারদর্শিতার ক্ষেত্রে ঢাকার খ্যাতি গত কয়েক শতাব্দী ধরে অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী মোগল রন্ধন প্রণালী যেমন পোলাওভাত, বিরিয়ানী, বাকরখানি এবং
বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টান্ন এ এলাকার সুখ্যাতি ধরে রেখেছে।
পুরান
ঢাকার পুরুষরা ধুতি, লুঙ্গি, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবী এবং মহিলারা শাড়ি
সালোয়ার, কামিজ ও পর্দা হিসাবে বোরখা ব্যবহার করে থাকে। হিন্দু মেয়েদের
মধ্যে শাখা, সিঁদুর, বাজু ইত্যাদির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
ঢাকার
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গুলো হলো- পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি,
গয়না নৌকা, সাম্পান নৌকা ইত্যাদি। এর মধ্যে পুরান ঢাকার রাস্তায় ঘোড়ার গাড়ি
এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকার চলন দেখা যায়।
ঢাকার
ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্পের মধ্যে তাঁত, কাঁসা ও পিতল, সেলাই কাজ, বাঁশ ও
বেতের কাজ, স্বর্ণকার, কামার, কুমার কাঠের কাজ, হস্তলিপি ইত্যাদি
উল্লেখযোগ্য। মসলিন একসময় সারা বিশ্বে সমাদৃত ছিল কিন্তু উনিশ শতকের
মাঝামাঝি সময় এ শিল্প বন্ধ হয়ে যায়।
খেলাধূলা ও বিনোদন
মোরগ লড়াই
অতীতে
আরমেনীয় এবং মুসলমান উভয়েই মোরগ লড়াই দেখে অবসর কাটাত। এমনকি ইষ্ট ইন্ডিয়া
কোম্পানীর ইংরেজ অফিসাররও এই খেলার প্রতি আগ্রহী ছিল। সিরাজী, খোরসানী,
সাবজুয়ারী, রামপুরী, বুসারী ও আসিলী ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেনীর মোরগ ছিল।
এচাড়া বুলবুল, ময়না ও বউ কথা কও পাখির লড়াইও জনসাধারনের উপভোগ্য ছিল।
ষাঁড়ের লড়াই দেখতেও অনেকে উৎসাহী ছিলেন। কবুতরের খেলাও তখন অনুষ্ঠিত হত।
কবুতরকে বিভিন্ন নামে ডাকা হত। যেমনঃ গিরিবাজ, সিরাজী, গোলা, জাপ, কনিয়া,
মক্ষি ও লোটন। বর্তমানে এ সকল খেলার প্রচলন নেই বললেই চলে।
ঘুড়ি ওড়া
রং-বেরংএর ঘুড়ি ওড়ানো অতীতেরমতো বর্তমানেও সকলের কাছে সমান জনপ্রিয়।
|
![]() |
কুস্তি
সতের
শতকের রশিদ খান একজন অভিজাত বংশীয় কুস্তিগীর ছিলেন। ঢাকার প্রত্যেক
মহল্লায় দুই একটা কুস্তির আখড়া ছিল। আখড়ায় শারীরিক অনুশীলনের পর
প্রশিক্ষনার্থীদের শরীর লাল মাটি দিয়ে দলাই মলাই কর হতো।
সাঁতার
বুড়িগঙ্গায়
সাঁতার কাটা অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। মীরজা মুন্না একাধারে দক্ষ সাতারু এবং
অন্যতম কুস্তিগীর ছিলেন। বর্তমানে শহরাঞ্চলে সাঁতার শেখার কিছু প্রতিষ্ঠান
রয়েছে।
আধুনিক খেলা ধূলা
বর্তমানে
এই জেলায় সব আধুনিক খেলাই প্রচলিত। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস, দাবা,
টেবিল টেনিস, বাস্কেট বল প্রভৃতি খেলা জনসাধারনের কাছে অত্যন্ত প্রিয়।
কাবাডি
হা-ডু-ডু বা কাবাডি পুরানো খেলা হলেও এখন পর্যন্ত পল্লী এলাকায় সমান জনপ্রিয়। হা-ডু-ডু বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ের খেলা।
দাবা
সারা দেশেই দাবা একটি জনপ্রিয় খেলা। নিয়াজ মোর্শেদ, রানী হামিদ, রিফাত-বিন-সাত্তার, জিয়াউর রহমান প্রমুখরা দাবার উল্লেখযোগ্য তারকা।
ফুটবল
এস
কময় প্রতিবছর ঢাকা ষ্টেডিয়ামে আগা খান গোল্ড কাপ এর মতো আন্তজার্তিক পুটবল
টূর্নামেন্ট সারা দেশের মানুষকে উদ্দীপিত করে রাখতো। অল্প কিছু সময়
প্রেসিডেন্টস গোল্ড কাপ আন্তজার্তিক ফুটবল টুর্ণামেন্ট ঢাকা ষ্টেডিয়ামে
অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও ঢাকা ষ্টেডিয়ামে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক
টুর্ণামেন্ট হয়েছিল এশিয়া কাপ, অনুর্ধ ২১ ফুটবল টুর্নামেন্ট।
ক্রিকেট
বর্তমানে
ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় অন্যান্য খেলাধূলা ম্রিয়মান হয়ে গেয়ে বলা যায়।
স্বাধীনতা পূর্বের ন্যঅয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম পুনরায় আন্তর্জাতিক
টেস্ট ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে। এছাড়াও মিরপুর জাতীয়
ষ্টেডিয়ামও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই
স্টেডিয়ামগুলোতে এখন নিয়মিত অভ্যন্তরীণ ও আন্তজার্তিক ক্রিকেট খেলাসমূহ
নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
হকি
হকি খেলাও একটি সমান জনপ্রিয় খেলা। আন্তজার্তিক পর্যায়েও বাংলাদেশ হকি খেলায় অংশগ্রহন করে থাকে।
বর্তমানে এ্যাথলেটিকস একটি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় কেলা।
শুটিং
কাজী শাহানা পারভীন এই জেলার সেরা শুটার তিনি দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন।
বাংলাদেশের
খেলাধূলার সরকারী নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া কাউন্সিল। এর সদর
দপ্তর হচ্ছে ঢাকায়। এছাড়াও প্রায় ৩০টি ক্রীড়া ফেডারেশন ঢাকার সদর দপ্তর
হতেই জেলা ক্রীড়া সমিতিগুলোর মাধমে সারা দেশের খেলাধূলার কার্যক্রম
দেখাশোনা ও পরিচালনা করে। এই ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ
অলিম্পিক এসোসিয়েশন যার সদর দপ্তরও ঢাকায় অবস্থিত। উল্লেখযোগ্য ক্রীড়া
ফেডারেশন; বাংলাদেশ বস্কেটবল ফেডারেশন; বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ
ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন; বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন; বাংলাদেশ টেবিল টেনিস
ফেডারেশন; বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ
বক্সিং ফেডারেশন; বাংলাদেশ আর্চারী ফেডারেশন; বাংলাদেশ এমেচার এথলেটিক
ফেডারেশন; বাংলাদেশ খো খো ফেডারেশন; বাংলাদেশ তাইকুন্ডু ফেডারেশন।

ঢাকার
উল্লেখযোগ্য খেলাধূলার কেন্দ্রগুলো হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকা
সংলগ্ন আউটার ষ্টেডিয়াম, ন্যাশনাল সুইমিংপুল, মাওলানা ভাসানী হকি
ষ্টেডিয়াম, মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম, উডেন ফ্লোর জিমনেশিয়াম, ঢাকা
জেলা ক্রীড়া সমিতি; মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়াম ও তা সংলগ্ন সুইমিংপুল
কমপ্লেক্স; মিরপুর জাতীয় ইনডোর ষ্টেডিয়াম; বনানীর আর্মি ষ্টেডিয়াম ও
নৌবাহিনীর সুইমিং কমপ্লেক্স। এছাড়াও ধানমন্ডির আবহানী ক্লাব মাঠ, ধানমন্ডি
ক্লাব মাঠ এবং কলাবাগান ক্লাব মাঠেও সারা বছর ধরে বিভিন্ন লীগ ও
টুর্ণামেন্টের খেলা চলে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)
ঢাকা জেলায় অবস্থিত।
দেশের
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ক্রীড়া ক্লাব,সমিতি,শিশু-কিশোর সংগঠন সমূহের
ছেলেমেয়েদের মধ্যে খেলাধুলার ব্যাপক চর্চা ও ক্রীড়া মানসিকতার উন্মেষ
সাধনের জন্য সারাদেশে ক্রীড়ার ব্যাপক সম্প্রসারণ,মান উন্নয়ন,পরিকল্পনা
গ্রহন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্রীড়া পরিদপ্তরের আওতাধীন ৬৪টি জেলায় ক্রীড়া
পরিদপ্তর প্রণীত বাৎসরিক ক্রীড়া সূচি অনুযায়ী জেলা ক্রীড়া অফিস, ঢাকা কাজ
করে চলেছে।
বাৎসরিক ক্রীড়া সূচি ২০০৮-২০০৯ঃ
ক) জেলা ক্রীড়া অফিস,ঢাকা ক্রীড়া পরিদপ্তর প্রণীত বাৎসরিক ক্রীড়া সূচি
অনুযায়ী জেলায় ক্রীড়া কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ২০০৮-০৯ অর্থ বৎসরে
ক্রীড়ার ৪টি বিষয়ে (হকি, ফুটবল, ভলিবল,ও হ্যান্ডবল) মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ
এবং ৪টি বিষয়ে (ক্রিকেট,দাবা, এ্যাথলেটিকস ও কাবাডি) প্রতিযোগিতার কর্মসূচি
বাস্তবায়িত হয়েছে। ক্রীড়ার উক্ত ৪টি বিষয়ে প্রশিক্ষণে জেলার ১২০ জন এবং
প্রতিযোগিতায় ৩৭২ জনসহ মোট ৪৯২ জন ছেলেমেয়ে অংশগ্রহন করে।
খ) বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০০৯-২০১০ ঃ বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির আওতায় ২০০৯-২০১০
অর্থবৎসরে ক্রীড়ার ৪টি বিষয়ে (হকি,ক্রিকেট,ভলিবল ও ফুটবল) মাসব্যাপী
প্রশিক্ষণ এবং ক্রীড়ার ৪টি বিষয়ে (দাবা, এ্যাথলেটিকস,কাবডি ও সাঁতার )
প্রতিযোগিতার কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। যার মধ্যে দাবা প্রতিযোগিতা
ইতোমধ্যে ধামরাই উপজেলা জ্যোতি বিদ্যা নিকেতনে গত ৭/১১/০৯ তারিখ
বাস্তবায়িত হয় । জনাব মোঃ ফরিদুর রহমান, সহকারী কমিশনার,ভূমি, প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। গত ০২/১১/০৯ তারিখ
হতে মওলানা ভাষানী হকি স্টেডিয়ামে হকি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে হকি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন,
জনাব আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস, পরিচালক, ক্রীড়া পরিদপ্তর।
জেলা ক্রীড়া অফিস,ঢাকা এর বার্ষিক ক্রীড়া সূচি ২০০৯-২০১০
ক্রমিক নং
|
মাস
|
তারিখ
|
কর্মসূচীর স্থান
|
কর্মসূচী
|
মঞ্জুরীকৃত ক্রীড়া সামগ্রীর ব্যবহার সংক্রান্ত পরিদর্শন
|
মন্তব্য
|
||
প্রশিক্ষণ
(মাসব্যাপী)
|
প্রতিযোগিতা
|
ক্লাব
পরিদর্শন
|
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
পরিদর্শন
|
|||||
১
|
২
|
৩
|
৪
|
৫
|
৬
|
৭
|
৮
|
৯
|
১
|
জুলাই/০৯
ও
আগস্ট/০৯
|
০১/০৭/০৯
থেকে
৩১/০৮/০৯
|
জেলার আওতাধীন সকল উপজেলা পরিদর্শন
ও কর্মসূচীর সম্ভব্য স্থান চিহ্নিত করণ।
|
--
|
--
|
৯
|
৯
|
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/
ক্রীড়া ক্লাবের সহযোগিতায়।
|
২
|
সেপ্টেম্বর/০৯
ও
আক্টোবর/০৯
|
১৫/০৯-৩০/০৯
০১/১০-০৬/১০
|
ধামরাই
ঢাকা সিটি
|
--
--
|
দাবা
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৩
|
আক্টোবর/০৯
ও
নভেম্বর/০৯
|
০৭/১০-০৬/১১
০৯/১১-১৬/১১
|
ঢাকা সিটি
সাভার
|
হকি
--
|
--
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৪
|
নভেম্বর/০৯
ও
ডিসেম্বর/০৯
|
১৭/১১-০৩/১২
০৮/১২-১৪/১২
|
সাভার
কেরাণীগঞ্জ
|
--
--
|
কাবাডি
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৫
|
ডিসেম্বর/০৯
ও
জানুয়ারি/১০
|
১৫/১২-১৪/০১
১৭/০১-২০/০১
|
কেরাণীগঞ্জ
নবাবগঞ্জ
|
ক্রিকেট
--
|
--
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৬
|
জানুয়ারি/১০
ও
ফেব্রুয়ারি/১০
|
২১/০১-০৩/০২
০৯/০২-১৫/০২
|
নবাবগঞ্জ
ঢাকা সিটি
|
--
--
|
এ্যাথলেটিক্স
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৭
|
ফেব্রুয়ারি/১০
ও
মার্চ/১০
|
১৬/০২-১৫/০৩
১৮/০৩-২৩/০৩
|
ঢাকা সিটি
সাভার
|
ভলিবল
--
|
--
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৮
|
মার্চ/১০
ও
এপ্রিল/১০
|
২৪/০৩-০৫/০৪
০৭/০৪-১২/০৪
|
সাভার
দোহার
|
--
--
|
সাঁতার
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
৯
|
এপ্রিল/১০
ও
মে/১০
|
১৩/০৪-১২/০৫
১৬/০৫-২৪/০৫
|
দোহার
ঢাকা সিটি
|
ফুটবল
--
|
--
--
|
--
৩
|
--
৩
|
ঐ
|
১০
|
মে/১০
ও
জুন/১০
|
২৭/০৫-১৭/০৬
|
মূল্যায়ন
|
--
|
--
|
--
|
--
|
ঐ
|
মোট ১২ মাস
|
--
|
--
|
৪টি
|
৪টি
|
৩৩
|
৩৩
|
--
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন